ঘুমানোর আগে কোন দোয়া পড়লে সমস্ত গুনাহ মাফ হয়

ঘুমানোর আগে কোন দোয়া পড়লে সমস্ত গুনাহ মাফ হয়


আল্লাহ তা’আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে। কিন্তু দুনিয়াতে মানুষ বিভিন্ন ধরনের পাপ কাজ বা গুনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ে। আর গুনাহ থেকে মাফ পাওয়ার জন্য আল্লাহ তা’আলার কাছে দোয়া চাইতে হয়। এমন অনেক দোয়া আছে যে দোয়াগুলো রাতে ঘুমানোর আগে পাঠ করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দেন।





আমাদের আজকের এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় হলো ঘুমানোর আগে কোন দোয়া পড়লে সমস্ত গুনাহ মাফ হয়



ঘুমানোর আগে কোন দোয়া পড়লে সমস্ত গুনাহ মাফ হয়


আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমানোর আগে দোয়া বা আমল করতেন।এর মধ্যে এমন একটি দোয়ার কথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে দোয়াটি ঘুমানোর আগে করলে পড়লে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ গুনাহ হওয়া মাফ হয়ে যায়। 


এ সম্পর্কে ইবনু হিব্বান ও ইবনু আবি শায়বা হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ”যে ব্যক্তি বিছানায় শুয়ে এই দোয়া পড়বে তার গুনাহ গুলো মাফ হয়ে যাবে। যদিও তা সমুদ্রের ফেনা সামান হয়”। নিচে দোয়াটি দেওয়া হলোঃ


দোয়াটি হলোঃ


لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ، لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ للهِ وَ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ


বাংলা উচ্চারণঃ ”লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু; লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির। লা হাওলা ওয়া লা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি। সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।”

অর্থঃ “আল্লাহ ব্যতিত সত্যিকারের কোনো উপাস্য নেই। তাঁর কোনো অংশীদার নেই। তাঁর জন্য রাজত্ব এবং তাঁর জন্যই সব প্রশংসা আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপায় ও সামর্থ্য নেই। আল্লাহ পবিত্র এবং তাঁর জন্যই সব প্রশংসা। আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাহ নেই আর আল্লাহ সবচেয়ে মহান।”


তাই আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার জন্য বা গুনাহ মাফ করানোর জন্য ঘুমাতে যাওয়ার আগে উপরোক্ত পাঠ করা উচিত। 



ঘুমের আগে মহানবী (সা.) যে ৫ আমল করতেন





রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর আগে অনেক জিকির, দোয়া বা আমল করতেন। নিচে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর করা ৫টি আমল তুলে ধরা হলোঃ



১.আয়াতুল কুরসি পাঠ করা



রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সকল আমল করতেন তার  মধ্যে অন্যতম একটি আমল হল আয়াতুল কুরসি পাঠ করা।


এ সম্পর্কে সহীহ বুখারি হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ”তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।”নিচে আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ সহ দেওয়া হলঃ


আয়াতুল কুরসিঃ


اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-


বাংলা উচ্চারণঃ “আল্লাহু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুম, লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহু মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্ব। মান জাল্লাজি ইয়াশফা’উ ইনদাহু ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহিতুনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহি ইল্লা বিমা- শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়াতি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলিয়্যূল আজিম।”


 অর্থঃ “আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁকে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পেছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।”


তাই ঘুমন্ত অবস্থায় শয়তানের বদ নজর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আয়াতুল কুরসি পাঠ করা উচিত।



২.ঘুমের দোয়া পড়া



ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই আল্লাহকে স্মরণ করে ঘুমাতে যাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারন ঘুমের দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা যায়।


এ সম্পর্কে সহিহ আবু দাউদ হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ”যে ব্যক্তি শোয়ার পর আল্লাহর নাম নেয় না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা নেমে আসবে।”নিচে ঘুমের দোয়া দেওয়া হলোঃ

দোয়াটি হলোঃ


اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا 

বাংলা উচ্চারণঃ “আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।”

 অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমারই নামে ঘুমাই এবং তোমার নামেই জাগ্রত হই।”


উপরোক্ত দোয়া সম্পর্কে সহীহ বুখারী হাদিসে এসেছে, হযরত হুযাইফা (রাঃ) বর্ণনা করে বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলায় নিজ বিছানায় শোয়ার( ঘুমানোর আগে) সময় নিজ গালের নিচে হাত রাখতেন, আর উপরোক্ত দোয়াটি পড়তেন।”


৩.সূরা নাস, সূরা ফালাক ও সূরা ইখলাস পাঠ করে শরীরে ফুঁ দেওয়া


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমাতে যাওয়ার আগে যে আমলগুলো করতেন তার মধ্যে অন্যতম আরেকটি আমল হলো সূরা নাস সুরা ফালাক ও সূরা ইখলাস পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই হাত উঁচু করে সূরা নাস সুরা ফালাক ও সূরা ইখলাস পাঠ করে সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন।


এ সম্পর্কে সহিহ বুখারী হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করে বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে যখন বিছানায় যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে সূরা ইখলাস সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফু দিতেন। অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যতদূর সম্ভব দেহে তিনবার দুই হাত বুলাতেন।নিচে সূরা নাস সুরা ফালাক ও সূরা ইখলাস উচ্চারণ সহ দেওয়া হলঃ 


সূরা নাসঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বাংলা উচ্চারণঃ”বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
অর্থঃ”পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে”

قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ ، مَلِكِ النَّاسِ ، إِلهِ النَّاسِ ، مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ، اَلَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِي صُدُوْرِ النَّاسِ ، مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ،


বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল আঊযু বিরব্বিন্‌ না-স। মালিকিন্‌ না-স। ইলা-হিন্‌ না-স। মিন্‌ শার্রিল অসওয়া-সিল খান্না-স। আল্লাযী ইউওয়াসবিসু ফী সুদূরিন্‌ না-স। মিনাল জিন্নাতি অন্‌ না-স।”

অর্থঃ ”তুমি বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি, মানুষের প্রতিপালক, মানুষের অধীশ্বর, মানুষের উপাস্যের কাছে- তার কুমন্ত্রণার অনিষ্ট হতে, যে সুযোগমত আসে ও (কুমন্ত্রণা দিয়ে) সরে পড়ে। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের হৃদয়ে, জিন ও মানুষের মধ্য হতে।”


সূরা ফালাকঃ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বাংলা উচ্চারণঃ”বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
অর্থঃ”পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে”


 قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ  ، مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ، وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ، وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ ، وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক্ব; মিন শাররি মা খালাক্ব; ওয়া মিন শাররি গাসিক্বিন ইজা ওয়াক্বাব; ওয়া মিন শাররিন নাফ্ফাছাতি ফিল উক্বাদ; ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইজা হাসাদ।”

অর্থঃ “বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে। অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।”


সূরা ইখলাসঃ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বাংলা উচ্চারণঃ”বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
অর্থঃ”পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে”


قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ، اللَّهُ الصَّمَدُ ، لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ، وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুচ্চামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।”

অর্থঃ ”(হে রাসুল! আপনি) বলুন, তিনিই আল্লাহ, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই।”


৪.সূরা বাকারার শেষের ২ আয়াত পাঠ করা



সারা রাতে নিরাপত্তার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমাতে যাওয়ার আগে সূরা বাকারা শেষে ২ আয়াত তেলাওয়াত করতেন।


এ সম্পর্কে সহীহ বুখারী হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করে বলেছেন, ”যদি কোন ব্যক্তি সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করে, তবে এটিই তার জন্য যথেষ্ট।” নিচে সূরা বাকারার শেষের দুই আয়াত উচ্চারণসহ দেওয়া হল” 



সূরা বাকারার শেষের দুই আয়াতঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বাংলা উচ্চারণঃ”বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
অর্থঃ”পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে”


آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আমানুর-রাসুলু বিমা উংজিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি, লা নুফার-রিকু বাইনা আহা’দিম-মির রুসুলিহি। ওয়া ক্বালু সামি’না, ওয়া আত্বা’না, গুফরা নাকা, রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।”

অর্থঃ “রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।”


لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ


বাংলা উচ্চারণঃ ”লা ইউ কাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস-আ’হা। লাহা মা কাসাবাত ওয়া আ’লাইহা মাক তাসাবাত। রব্বানা লা-তু আখজিনা-ইন্না সিনা- আও আখত্বা’না। রাব্বানা ওয়ালা তাহ’মিল আ’লাইনা ইসরান কামা হা’মালতাহু আ’লাল্লাজিনা মিন ক্বাবলিনা। রব্বানা ওয়ালা তুহা’ম্মিলনা মা-লা ত্বাকাতালানা বিহ। ওয়াআ’ফু আ’ন্না, ওয়াগ ফিরলানা, ওয়ার হা’মনা। আংতা মাওলানা, ফানছুরনা আ’লাল ক্বাওমিল কাফিরিন। (আমিন)।”

অর্থঃ “আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।(আমিন)”



৫.সুরা মুলক পাঠ করা



রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সূরা মুলক পাঠ করতেন। কারণ যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা মূলক পাঠ করবে কেয়ামতের দিন সুরা মুলক তার জন্য সুপারিশ করবে এবং সূরা মূলক কবরের আযাব থেকে হেফাজত করবে।


এ সম্পর্কে তিরমিজি হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোরআনের মধ্যে ৩০ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে, যেটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক (সুরা মুলক)।”


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে সূরা মুলক না পড়ে ঘুমাতে যেতেন না।






সর্বপরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দোয়া, জিকির বা বিভিন্ন আমল করতেন। তার মধ্যে উপরে কয়েকটি আমল আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের প্রত্যেক মুসলমানদের উচিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনধারা অনুসরণ করে আমল করা। 

*

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم