নখে কালো দাগ কিসের লক্ষণ
অনেকের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে দেখা যায় হাতে বা পায়ের নখের উপরে কালো দাগ বা নখের কোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অনেকেই এই নখের উপরে কালো দাগ বা নখের কোনা কেন নষ্ট হয়ে যায় সে সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় হলো পায়ের নখ কালো কেন হয়, নখে কালো দাগ কিসের লক্ষণ, নখের কালো দাগ দূর করার উপায়,পায়ের নখ মরে যায় কেন, নখের কুনি দূর করার ঘরোয়া উপায়,কোন ভিটামিনের অভাবে নখের সমস্যা হয় এবং পায়ের নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম।
আমরা আজকে এই পোস্টে আলোচনা করব নখে কালো দাগ কিসের লক্ষণ
পায়ের নখ কালো কেন হয়
শরীরে বিভিন্ন লোকের রোগের লক্ষণ হিসেবে বা কোন সংক্রামক রোগের দেখা দিলে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে। নখ কালো হয়ে যাওয়ার কিছু কারণ দেওয়া হলোঃ
১.অনেক সময় আঘাত জনিত কারণে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
২.বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক বা ফাঙ্গাস এর আক্রমণের ফলে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৩.শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি জনিত কারণে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৪.ত্বকে ক্যান্সার হলে অনেক সময় হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৫.অনেক সময় বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীরের রক্ত চলাচলের মাত্রা হ্রাস পায়। যার কারণে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৬.শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে তার প্রভাব নাকের উপর যে পড়তে পারে। যার কারণে নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৭.অনেক সময় ফুসফুসে ইনফেকশন বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৮.কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে ও হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৯.হার্টের সমস্যার জনিত কারণে হাত ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
নখে কালো দাগ কিসের লক্ষণ
বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবে পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে। আমরা অনেক সময় পায়ের নখ কালো হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করি। তব শরীরে কিছু মারাত্মক রোগের কারণেও কালো হয়ে যেতে পারে।
১.পায়ের নখ কালো হয়ে যাওয়া ত্বকে ক্যান্সার বা স্কিন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
২.পায়ের নখ কালো হয়ে যাওয়া ফুসফুসের সমস্যা লক্ষণ হতে পারে।
৩.শরীরে পুষ্টিহীনতার অভাব দেখা দিলে তার লক্ষণ হিসেবে ও পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে।
৪.পায়ের নখ কালো হয়ে যাওয়া হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
৫.শরীরে ফাঙ্গাস বা বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটলে তার লক্ষণ হিসেবেও পায়ের কালো হয়ে যেতে পারে।
৬.অনেক সময় হরমোনের ইমব্যালেন্স বা ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ হিসেবে ও পায়ের কালো হয়ে যেতে পারে।
শরীরে উপরোক্ত রোগের লক্ষণ হিসেবে পায়ের নখ কালো হয়ে যেতে পারে। তাই পায়ের নখ কালো হয়ে গেলে সেটা স্বাভাবিক মনে না করে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং কি কারণে পায়ের নখ কালো হয়ে গেছে সেই কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
নখের কালো দাগ দূর করার উপায়
নখে কালো দাগ দেখা দিলে প্রথমে খুঁজে বের করতে হবে ঠিকই কারণে কালো দাগ হয়েছে। তারপর সেই অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও নকের যে কোন দাগ দূর করার জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
১.নকের উপরে যে কোন দাগ দূর করার জন্য টুথপেস্ট খুব কার্যকরী একটি উপায়। নিয়মিত একটি ব্রাশের সাহায্যে টুথপেস্ট দিয়ে পরিষ্কার করলে নখের উপরে যে কোন দাগ বা কালো দাগ দূর হয়ে যেতে পারে।
২.নখের কালো দাগ দূর করার জন্য হালকা কুসুম গরম পানিতে লেবু টুকরো টুকরো কেটে তার মধ্যে ২ থেকে ৩ মিনিট পা বিজিয়ে রাখলে নখের উপরে যেকোনো দাগ চলে যেতে পারে।
৩.নখের উপরে কালো দাগ বা যে কোন দাগ দূর করার জন্য বেকিং সোডার সাথে লেবু মিশিয়ে নখে মেসেজ করলে সহজেই কালো দাগ দূর হয়ে যেতে পারে।
৪.অনেক সময় আপেল সিডার ভিনেগারের সাথে পানির মিশিয়ে তার ভিতর পা ভিজিয়ে রাখলে নখের উপরে থাকা যেকোনো ধরনের দাগ দূর হয়ে যেতে পারে।
৫.এছাড়া ও পায়ে যেকোনো আঘাত বা কোন ধরনের পেরেক ঢোকার কারণে কালো হয়ে গেলে। সেটি অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে যদি কেটে ফেলা হয়। তাহলে নখের কালো দাগ চলে যাতে পারে।
৬.যদি কোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে পায়ের নখ কালো হয়ে যায়। তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ চেঞ্জ করার মাধ্যমে পায়ের নখ কালো হয়ে যাওয়া কমে যেতে পারে।
পায়ের নখ মরে যায় কেন
১.অনেক সময় আঘাত জনিত কারণে পায়ের নখ কালো হয়ে যায় পরবর্তীতে নখ মরে যেতে পারে।
২.বিভিন্ন ধরনের ফাঙ্গাস বা ছত্রাকের সংক্রমণের ফলে পায়ের নখ মরে যেতে পারে।
৩.বিভিন্ন ধরনের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে পায়ের নখ মরে যেতে পারে।
৪.শরীরে পুষ্টিহীনতার সমস্যা দেখা দিলেও পায়ের নখ মরে যেতে পারে।
নখের কুনি দূর করার ঘরোয়া উপায়
অনেক সময় পায়ের বা হাতের নখ বাড়ার কারণে সেটি মাংসের ভিতরে ঢুকে যায় এটাকেই মূলত নখের কুনি বলা হয়। এ সময় অতিরিক্ত ব্যথা বা যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়।এছাড়া এই সমস্যাটাই মূলত প্রধান কারণ হলো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
১.নক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
২.বেকিং সোডা ও লেবু গরম পানিতে মিশিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট হাত এবং পা ভিজিয়ে রাখলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়। যার ফলে নখের কুনি সহজেই কমে যেতে পারে।
৩.নখের কুনি দেখা দিলে নারকেলের তেল ম্যাসাজ করা যেতে পারে। এতে নখের কুনি দূর হয়ে যায়।
৪.অলিভ অয়েল ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাই নখের কুনির সমস্যা দেখা দিলে অলিভ অয়েল মেসেজ করা যেতে পারে। এতে নখের কুনি সহজে ভালো হয়ে যেতে পারে।
৫.আপেল সিডার ভিনেগার গরম পানিতে মিশিয়ে তাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট আধাঘন্টা হাত ও পা ভিজিয়ে রাখলে সহজেই ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় এবং নখের কুনি ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৬.নখের কুনি খাওয়ার অন্যতম কারণ হলো আটসাট জুতা পরিধান করা। তাই সবসময় ঢিলেঢালা জুতা পরিধান করতে হবে।
৭.এছাড়াও যেহেতু ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের ফলেও নখের কুনির সমস্যা দেখা দেয় তাই সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জুতা পরিধান করতে হবে।
৮.দাঁত দিয়ে নখ কাটার আভাস পরিহার করতে হবে। কারণ দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। যার ফলে নখের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কোন ভিটামিনের অভাবে নখের সমস্যা হয়
ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে নখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।এছাড়াও ভিটামিন এ ভিটামিন কে এবং জিংকের কারণেও নখে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পায়ের নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম
যেহেতু নখের কুনি ব্যাকটেরিয়াল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের ফলে হয়ে থাকে। তাই এই সমস্যা দূর করার জন্য কিছু ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে নখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে এবং নখের কুনির সমস্যা দূর হবে।
- Dermasim 1% Cream
- Terbison 1% Cream
- Terbiderm 1% Cream
- Mycofem 1% Cream
- Fintrix 1% Cream
- Tebina 1% Cream
উপরোক্ত ক্রিমগুলো লাগালে পায়ের নখের কুনির সমস্যা দূর হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে ।
সর্বোপরি হাতে ও পায়ের নখের যেকোনো সমস্যা দৈনন্দিন জীবনকে ভোগান্তিতে ফেলে দেয়। কারণ দৈনন্দিন জীবনে হাত এবং পায়ের কার্যক্রম সব থেকে বেশি থাকে। তাই হাতের ও পায়ের নখের সুস্থতার জন্য বা ভালো রাখার জন্য সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে।