কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া বাংলা উচ্চারণ

কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া বাংলা উচ্চারণ


আমাদের মৃত্যুর পর কবর হবে আসল ঠিকানা। প্রত্যেক মানুষকেই একদিন না একদিন কবরে যেতে হবে।কবরে মাটি দেওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম দোয়া করতেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই দোয়া সম্পর্কে জানা নেই। তাই আমাদের আজকে পোস্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া বাংলা উচ্চারণ, কবরে মরদেহ রাখার দোয়া, লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম, লাশ নিয়ে যাওয়া বা খাটিয়া বহন করার দোয়া সম্পর্কে।


কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া বাংলা উচ্চারণ


আমরা আজ এই পোস্টে আলোচনা করব কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া বাংলা উচ্চারণ



কবরে মাটি দেওয়ার বিধান


কবরের মাটি দেওয়ার বিধান আপনি কি জানেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা জানবো কবরে মাটি দেওয়ার বিধান। কবর দেওয়ার নিয়ম হলো "মৃত ব্যক্তির মাথা উত্তর দিকে ও পা দক্ষিণ দিকে, ডান দিকে ঘুরিয়ে কিবলার দিকে মুখ রাখতে হয়।" তাছাড়া কবরের লাশ রাখার নিয়ম ও লাশ নিয়ে যাওয়ার দোয়া আপনি জানেন কি?



খাটিয়া বহন করার দোয়া নেই ,এই সময় নীরব থাকা উত্তম এবং আখিরাতের কথা চিন্তা করা। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।



কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া


পৃথিবীতে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তাদেরই মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।মৃত্যু অনিবার্য একটি বিষয়।হাদিসে আছে মানুষের মৃত্যুর পর তাকে তাড়াতাড়ি কবর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। একজন মৃত ব্যক্তিকে প্রথমে ভালো করে গোসল করাতে হয় তারপরে তার জানাজা পড়াতে হয়। জানাজার পর তাড়াতাড়ি তাকে দাফন দিতে হয়। মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার পর মাটি দেয়ার সময় কোরআনের একটি আয়াত পড়ার কথা হাদিসে এসেছে। নিম্নে কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া আলোচনা করা হলঃ
 


হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রসুল সা. এর কন্যা উম্মে কুলসুমকে কবরে রাখা হয় তখন রসুল সা. বললেন,



مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى  


উচ্চারণ: মিনহা খালাকনাকুম ওয়া ফিহা নুঈদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তা রাতান উখরা। 


অর্থ: আমি মাটি থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, আর মাটিতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনব। পুনরায় তোমাদেরকে মাটি থেকে বের করব। (সুরা: ত্বহা ৫৫নং আয়াত)




কোনো মৃত ব্যক্তিকে মাটি দেয়ার সময় দোয়াটি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথমবার মাটি দেয়ার সময় ‘মিনহা খালাকনাকুম’ বলতে হয়। দ্বিতীয়বার ‘ওয়া ফিহা নুঈদুকুম’ বলতে হয়। আর তৃতীয়বার বলতে হয় ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা’। (সুনানে বায়হাকি ৬৯৭৩)


কবরে মরদেহ রাখার দোয়া



মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার দোয়া টি হলো "বিসমিল্লাহ, ওয়া বিল্লাহ, ওয়া ফি সাবিলিল্লাহ, ওয়া আলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ।" কবরে মৃত ব্যাক্তিকে নামানোর সময় এই দোয়া পাঠ করতে হয়।

নবী করিম (সাঃ) মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় দোয়া পড়তে বলেছেন। দোয়াটি নিম্নে দোয়া হলোঃ


بِسْمِ الله وَ عَلَى سُنَّةِ رَسُوْلِ الله بِسْمِ اللهِ وَ عِلَى مِلَّةِ رَسُوْلِ الله 



উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ ওয়া আলা সুন্নাতি রসুলিল্লাহ। অন্য বর্ণনায় এসেছে- বিসমিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রসুলিল্লাহ।




অর্থ: আল্লাহ তাআলার নামে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ত্বরিকা বা দলের ওপর রাখা হচ্ছে। (তিরমিজি ও আবু দাউদ)




লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম


লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম



লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম সম্পর্কে আলমু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৫৯২০



أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ حَمَلَ جَوَانِبَ السَّرِيرِ الْأَرْبَعَ كَفَّرَ اللَّهُ عَنْهُ أَرْبَعِينَ كَبِيرَةً»


অর্থ : পরম করুণাময়, পরম করুণাময় আল্লাহর নামে। হযরত আনাস বিন মালেক (রা:) বলেন, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন। যে ব্যক্তি মৃতের খাটিয়া এর চারপাশ বহন করে, এই কাজের জন্য আল্লাহ তা'আলা সেই ব্যাক্তির ৪০ টি কবীরা গোনাহ মাফ করে দেন।

ফুক্বাহায়ে কেরাম উক্ত হাদিসের ফযীলত পাবার পদ্ধতি সম্পর্কে বলেছেন যে, লাশের খাঁটিয়ার প্রতি পাশে দশ কদম করে ৪০ কদম চলা। যেমন-

  • প্রথমে লাশের ডান হাতের দিকের খাটিয়ার পায়া নিজের ডান কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে।
  • এরপর লাশের ডান পায়ের দিকের খাটিয়ার পায়া ডান কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে।
  • এরপর লাশের বাম হাতের দিকের খাটিয়ার পায়া নিজের বাম কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে।
  • এরপের লাশের বাম পায়ের দিকের খাটিয়ার পায়া নিজের বাম কাঁধে রেখে দশ কদম চলবে।

উপরোক্ত পদ্ধতিতে জানাযার লাশের খাটিয়া নেওয়া হলো মুস্তাহাব। অতএব, যদি কেউ দুর্বলতার কারণে বা যে কোনো কারণে এটি না করে, অথবা এরচেয়ে বেশি করে ফেলে, তাহলে কোন সমস্যা নেই।



লাশ নিয়ে যাওয়া বা খাটিয়া বহন করার দোয়া



মৃত ব্যক্তির 
খাটিয়া বহন করার সময় উচ্চৈঃস্বরে জিকির করা মাকরুহ। তখন তাদের করণীয় হলো, নীরবে-নিঃশব্দে চলা এবং আখেরাতের ফিকিরে নিমগ্ন থাকা। ইবনে জুরাইজ (রহ.) থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো মৃত ব্যক্তির সঙ্গে যেতেন তখন অধিক পরিমাণে নীরব থাকতেন এবং চিন্তামগ্ন থাকতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১১৩১৫)। 


হাসান বসরী (রহ.) থেকে বর্ণিত-কায়েস ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবিরা তিন সময় চুপ থাকতে পছন্দ করতেন। যুদ্ধ, কুরআন তিলাওয়াত এবং লাশের কাছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১১৩১৩)। 


 

অর্থাৎ মৃত ব্যক্তি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় জিকির করা মাকরুহ। এই সময়ে করণীয় হলো নীরবে ও নিঃশব্দে চলা এবং আখেরাতের কথা চিন্তা ফিকির করা।

*

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم