পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কত রাকাত

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কত রাকাত


নামাজ বেহেস্তের চাবি। মৃত্যুর পরে হাশরের ময়দানে আল্লাহ তা’আলা সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। সব ইবাদাতের থেকে নামাজ সর্বোত্তম ইবাদাত। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না যে প্রতিদিন কত রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা দৈনিক কত রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কত রাকাত ফরজ, সুন্নত সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করব।




আমাদের আজকের এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কত রাকাত



ফরজ নামাজ কি



ফরজ নামাজ হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এমন নামাজ যে নামাজ পড়া ফরজ বা বাধ্যতামূলক। ফরজ নামাজ না পড়লে গুনাহ হয়।আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুসলমানের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন।



পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ নামাজ কত রাকাত


দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে কত রাকাত ফরজ নামাজ সেটা অনেকেই সঠিকভাবে জানেনা। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ রয়েছে। নিচে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ১৭ রাকাত ফরজ নামাজের তালিকা দেওয়া হলঃ



নামাজের নাম                        ফরজ কত রাকাত

ফজরের নামাজ                      ২ রাকাত ফরজ

যোহরে নামাজ                      ৪ রাকাত ফরজ

আসরের নামাজ                      ৪ রাকাত ফরজ

মাগরিবের নামাজ                      ৩ রাকাত ফরজ

এশার নামাজ                      ৪ রাকাত ফরজ





সুন্নত নামাজ কি



দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ১৭ রাকাত ফরজ নামাজের পরে অন্য সব নামাজকে মূলত সুন্নাত নামাজ বলা হয়। সুন্নাত নামাজ হল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পড়া নামাজ।




সুন্নত কত প্রকার ও কি কি



নামাজ দুই প্রকার। 

১. সুন্নতে মুয়াক্কাদা 

২.সুন্নাতে যায়েদা 



১.সুন্নতে মুয়াক্কাদাঃ সুন্নাতে মক্কাদা নামাজ হল ফরজ নামাজের বাইরে অন্যান্য নামাজকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ বলা হয়। সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ রাসূল (সাঃ) বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ছেড়ে দিতেন না। তিনি দৈনিক এ নামাজ আদায় করতেন। সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করা রাসুল (সাঃ) এর একটি সুন্নত। অনেক হাদিসে এসেছে সুন্নতে মক্কাদা নামাজ না পড়লে গুনাহ হয়।


২.সুন্নাতে যায়েদাঃ ফরজ নামাজের আগেও পরে নামাজকে সুন্নাতে যায়েদা বলা হয়। সুন্নাতে যায়েদা নামাজ পড়া অপরিহার্য নয়। তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা সুনাতে যায়েদা নামাজ আদায় করতেন।সুন্নতে যায়েদা নামাজ না পড়লে গুনাহ হয় না।




পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নত নামাজ কত রাকাত



পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ও সুন্নাতে যায়েদা নামাজ মোট ২০ রাকাত নিচে সুন্নাত নামাজের তালিকা দেওয়া হলোঃ






নামাজের নাম

  সুন্নাতে মুয়াক্কাদা

 সুন্নাতে যায়েদা

ফজরের নামাজ              
   ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা

যোহরে নামাজ    ৬ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা

আসরের নামাজ                           
    ৪ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা

মাগরিবের নামাজ    
    ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা

এশার নামাজ     ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা      ৪ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা





পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কত রাকাত



পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ মোট ১২ রাকাত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ কারণবশত ছাড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ ছেড়ে দিতেন না। সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে।





পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নাম ও সময়



আল্লাহ তা'আলা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপরে ফরজ করেছেন। কিন্তু অনেক মানুষ নামাজের সঠিক সময় না জানার কারণে নামাজ পড়তে পারেন না। নিচে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নাম ও সময় দেওয়া হলঃ




নামাজের নাম                                                নামাজের সময়

ফজরের নামাজ                                               সুবহে সাদেকের পর থেকে সূর্যোদয়ের আগ                                                 পর্যন্ত।


যোহরে নামাজ                                               সূর্য মধ্য আসমান থেকে ঢলে পড়ার পর                                                     এবংবস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত যোহরের                                                  ওয়াক্ত বিদ্যমান থাকে।

আসরের নামাজ                                             যোহরের সময় শেষ হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত                                               পর্যন্ত এর সময়।   

মাগরিবের নামাজ                                             সূর্যাস্তের পর আকাশ থেকে লালিমা বিদায়                                                   নেওয়া পর্যন্ত।

এশার নামাজ                                            আকাশের লালিমা বিদায় নেওয়ার পর থেকে                                                সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত।





ফজরের আজানের আগে নামাজ পড়া যাবে কিনা



বর্তমানে অনেকের মনে একটি প্রশ্ন থাকে যে আযান দেওয়ার আগে নামাজ পড়া যাবে কি না। তবে আযান দেওয়ার আগে নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেলে নামাজ পড়ে নেওয়া যাবে। অনেক সময় ফজরের আযান ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পরে দেয়। তাই সুবহে সাদিকের সাথে সাথে যেহেতু ফজরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। তাই আযান না দিলেও ফজরের নামাজ পড়ে নেওয়া যাবে।




নামাজের নিষিদ্ধ সময় কত মিনিট



আল্লাহতালা নামাজ পড়ার জন্য যেমন নির্দিষ্ট সময় দিয়েছেন তেমন নামাজ পড়ার জন্য নিষিদ্ধ সময়ে রয়েছে বা নামাজের নিষিদ্ধ সময় কত মিনিট। অনেকেই এই সময় সম্পর্কে জানেনা যে কোন সময়ে নামাজ পড়া হারাম। নিচে নামাজের নিষিদ্ধ সময় দেওয়া হলঃ


নামাজ পড়ার নিষিদ্ধ সময় সম্পর্কে সহিহ ও বুখারী ও মিসকাত হাদীসে এসেছে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তিনটি সময়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ বা হারাম। নিচে এই তিনটি সময় উল্লেখ করা হলোঃ






১.সুবহে সাদিকের পর সূর্য উদয় হলে, সূর্য উদয়ের পর থেকে সূর্য একটু উঁচু না হওয়া পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষিদ্ধ বা হারাম।





২.সূর্য ঠিক মাথার উপর আসার পর থেকে একটু ঢলে বা হেলে না যাওয়া পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষিদ্ধ বা হারাম।





৩. সূর্য ডোবার সময় থেকে সূর্য ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষিদ্ধ বা হারাম।



সর্বোপরি নামাজ বেহেস্তের চাবি। তাই আমাদের দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে এবং শুদ্ধভাবে আদায় করা উচিত।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post