ঘুমানোর আগে সূরা মুলক পড়লে কি হয়

ঘুমানোর আগে সূরা মুলক পড়লে কি হয়


মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষকে তাঁর ইবাদত করার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।আল্লাহ ত ‘আলা পরকালে জান্নাত ও জাহান্নাম তৈরি করেছেন। দুনিয়াতে যে যত আল্লাহ তা’আলার ইবাদত করবে এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেখানো পথ অনুসরণ করবে এবং হাশরের ময়দানে যার নেকি যত ভারী হবে সে জান্নাতে যাবে।




তাই আমাদের প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর কুরআন ও হাদিস অনুসরণ করে আল্লাহ তা’আলার ইবাদত করা এবং নেকির পাল্লা ভারী করা উচিত। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা কুরআন ও হাদিসের আলোকে সূরা মূলক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।


আমাদের আজকের এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় হলো সুরা মুলক কখন পড়তে হয়, সূরা মূলক এর বাংলা উচ্চারণ, সুরা মুলক এর শানে নুযুল, রাতে সুরা মুলক পড়ার ফজিলত, ঘুমানোর আগে সূরা মুলক পড়লে কি হয়।



সুরা মুলক কখন পড়তে হয়



সূরা মূলক তেলাওয়াত করার গুরুত্ব অপরিসীম। সূরা মূলক পড়লে আল্লাহ তা’য়ালার সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে জানা যায়। সূরা মূলক দিনের যেকোনো সময় পড়া যায়। তবে সূরা মুলক রাতে পড়া উত্তম।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরা মুলক না পড়ে রাতে ঘুমাতেন না।




সূরা মূলক এর বাংলা উচ্চারণ






সুরা মুলক আল-মাক্কী সূরা। এই সূরায় ৩০ টি আয়াত রয়েছে। এই সূরা পড়লে আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে জানা যায়। নিচে এই সূরার আরবি,বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ দেওয়া হলঃ




بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বাংলা উচ্চারণঃ”বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
অর্থঃ”পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে”



১. تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”তাবা-রাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মূলকু ওয়া হুওয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন কাদির।” 

অর্থঃ"বরকতময় তিনি যার হাতের সর্বময় কর্তৃত্ব। আর তিনি সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।"


২. الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আল্লাজি খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়া-তা লিইয়াবলুওয়াকুম আইয়ুকুম আহছানু‘ আমালাওঁ ওয়া হুওয়াল ‘আজিজুল গাফুর।”

অর্থঃ ”যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।”

৩. الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِنْ فُطُورٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আল্লাজি খালাকা ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিন তিবা-কান মা- তারা- ফি খালকির রাহমা-নি মিন তাফা-উত ফারজি‘ইল বাসারা হাল তারা- মিন ফুতুর।”

অর্থঃ ”যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুনামযয়ের সৃষ্টিতে তুমি কোন অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোন ত্রুটি  দেখতে পাও কি?” 

৪. ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ছুম্মার জি’ইলবাসারা কাররাতাইনি ইয়ানকালিব ইলাইকাল বাসারু খা-ছিআওঁ ওয়া হুওয়া হাসির।”

অর্থঃ ”অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।” 

৫. وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ওয়া লাকাদ জাইয়ান্নাছ সামাআদ্দুনইয়া- বিমাসা-বিহা ওয়াযা’আলনা- হা- রুজুমাল লিশশায়াতিনি ওয়া আ’তাদনা- লাহুম ‘আযা- বাছছা’ঈর।”

অর্থঃ ”আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপুঞ্জ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আযাব।”

৬. وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ওয়া লিল্লাজিনা কাফারুবিরাব্বিহিম ‘আযা- বুযাহান্নামা ওয়াবি’ছাল মাসির।”
অর্থঃ ”আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতই না নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল।”

৭. إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ইজাউলকুফিহা- ছামি’উ লাহা- শাহিকাওঁ ওয়াহিয়া তাফুর।”

অর্থঃ ”যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।”

৮. تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”তাকা- দুতামাইয়াজুমিনাল গাইজি কুল্লামাউলকিয়া ফিহা- ফাওজুন ছাআলাহুম খাজানাতুহাআলাম ইয়া’তিকুম নাজির।”

অর্থঃ ”ক্রোধে তা ছিন্নভিন্ন হবার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি? “ 

৯. قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কা- লুবালা- কাদ যাআনা- নাজিরুন ফাকাজযাবনা- ওয়া কুলনা- মানাজযালাল্লা- হু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা- ফি দালা- লিন কাবির।”

অর্থঃ ”তারা বলবে,’ হ্যাঁ, আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল। তখন আমরা (তাদেরকে) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, আল্লাহ কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ।”

১০. وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ওয়া কা-লুলাও কুন্না- নাছমা’উ আও না’কিলুমা- কুন্না-ফিআসহা-বিছছা’ঈর।”

অর্থঃ "আর তারা বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।”

১১. فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقًا لِأَصْحَابِ السَّعِيرِ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ফা’তারাফুবিজামবিহিম ফাছুহক্বললিআসহা-বিছ ছা’ঈর।”

অর্থঃ ”অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য।” 

১২. إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ইন্নাল্লাজিনা ইয়াখশাওনা রাব্বাহুম বিলগাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন কাবির।”

অর্থঃ ”নিশ্চয়ই যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।”

১৩. وَرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ওয়া আছিররুকাওলাকুম আবিজহারুবিহি ইন্নাহু’আলিমুম বিজা- তিসসুদুর।”

অর্থঃ ”আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন কর অথবা প্রকাশ করো, নিশ্চয় তিনি অন্তর সমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।” 

১৪. أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আলা- ইয়া’লামুমান খালাকা ওয়া হুওয়াল্লাতিফুল খাবির।”

অর্থঃ ”যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষ্মদর্শী, পূর্ণ অবহিত।”

১৫. هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِنْ رِزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”হুওয়াল্লাজি যা’আলা লাকুমুল আরদা যালুলান ফামশুফি মানা-কিবিহা- ওয়া কুলুমির রিজকিহি ওয়া ইলাইহিন নুশুর।”

অর্থঃ ”তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিজিক থেকে তোমরা আহার কর। আর তার নিকটইপুনরুত্থান। ”

১৬. ءَاَمِنۡتُمۡ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আ আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইয়াখছিফা বিকুমুল আরদা ফাইযা- হিয়া তামুর।”

অর্থঃ ”যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ জমিন ধসিয়ে দেওয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে।”

১৭. أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আম আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইউরছিলা ‘আলাইকুম হা-সিবান ফাছাতা’লামুনা কাইফা নাজির।”

অর্থঃ ”যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী।”

১৮. وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ওয়া লাকাদ কাজযাবাল্লাজিনা মিন কাবলিহিম ফাকাইফা কা- না নাকির।”

অর্থঃ ”আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান( এর শাস্তি)?” 

১৯. أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত্তাইরি ফাওকাহুম সাফফা-তিওঁ ওয়াইয়াকবিদন। মাইউমছিকুহুন্না ইল্লাররাহমা-নু ইন্নাহুবিকুল্লি শাইয়িম বাসির।”

অর্থঃ ”তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুনাময় ছাড়া অন্য কেউ এদেরকে স্থির রাখে না। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।”

২০. أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُنْدٌ لَكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আম্মান হা-যাল্লাজি হুওয়া জুনদুল্লাকুম ইয়ানসুরুকুম মিন দু নিররাহমা-নি ইনিল কাফিরুনা ইল্লা- ফি গুরুর।”

অর্থঃ "পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোন সৈন্য আছে, যারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।” 

২১. أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَلْ لَجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আম্মান হা- যাল্লাজি ইয়ারজকুকুম ইন আমছাকা রিজকাহু বাল্লাজজুফি ‘উতুওবিওয়া নুফুর।”

অর্থঃ "অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিজিক দান করবে যদি আল্লাহ তার রিজিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।”


২২. أَفَمَنْ يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّنْ يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”আফামাইঁ ইয়ামশি মুকিব্বান ‘আলা- ওয়াজহিহি আহদা আম্মাইঁ ইয়ামশি ছাবি ইয়ান ‘আলা-সিরা-তিমমুছতাকিম।”

অর্থঃ ”যে ব্যক্তি উপুর হয়ে মুখের উপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হেদায়েত প্রাপ্ত নাকি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?” 

২৩. قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল হুওয়াল্লাজিআনশাআকুম ওয়া যা‘আলা লাকুমুছছাম‘আ ওয়াল আবসা-রা ওয়াল আফইদাতা কালিলাম মা-তাশকুরুন।”

অর্থঃ ”বল, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তঃকরণ সমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর।”

২৪. قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল হুওয়াল্লাজি যারাআকুম ফিল আরদিওয়া ইলাইহি তুহশারুন।”

অর্থঃ ”বল, তিনি তোমাদেরকে জমিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।”

২৫. وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ওয়া ইয়াকুলুনা মাতা-হা-যাল ওয়া’দুইন কুনতুম সা-দিকিন।”

অর্থঃ ”আর তারা বলে, সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”

২৬. قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল ইন্নামাল ‘ইলমু’ইনদাল্লা- হি ওয়া ইন্নামাআনা নাজিরুম মুবিন।”

অর্থঃ ”বল, এ বিষয়ে জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।”

২৭. فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تَدَّعُونَ

বাংলা উচ্চারণঃ ”ফালাম্মা-রাআওহু ঝুলফাতান সিআত ঊজুহুল্লাজিনা কাফারুওয়া কিলা হা-যাল্লাজি কুনতুম বিহি তাদ্দা’ঊন।”

অর্থঃ ”অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, এটাই হলো তা যা তোমরা দাবি করছিলে।”

২৮. قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَنْ مَعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল আরাআইতুম ইন আহলাকানিয়াল্লা-হু ওয়া মাম্মা‘ইয়া আও রাহিমানা- ফামাইঁ ইউজিরুল কা-ফিরিনা মিন ‘আযা-বিন আলিম।”

অর্থঃ ”বল, তোমরা ভেবে দেখেছ কি? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সাথে যারা আছে তাদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদের যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে কে রক্ষা করবে?”

২৯. قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল হুওয়াররাহমা-নুআ-মান্না-বিহি ওয়া’আলাইহি তাওয়াক্কালনা-, ফাছাতা’লামুনা মান হুওয়া ফি দালা-লিম মুবিন।”

অর্থঃ ”বল, তিনি পরম করুনাময়। আমরা তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং তার উপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে?”

৩০. قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ

বাংলা উচ্চারণঃ ”কুল আরাআইতুম ইন আসবাহা মাউকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়া’তিকুম বিমাইম মা’ঈন।”

অর্থঃ ”বল, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে বহমান পানি এনে দিবে?”



রাতে সুরা মুলক পড়ার ফজিলত





রাতে সূরা মূলক করার ফজিলত অনেক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে সূরা মূলক না পড়ে ঘুমাতে যেতেন না।আল্লাহ তা’আলা সর্বশক্তিমান এবং সর্ব ক্ষমতার অধিকারী সে সম্পর্কে এই সূরায় বলা হয়েছে।


এ সম্পর্কে সুনানে আত তিরমিজি হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি রাতে সূরা মূলক পাঠ করবে কিয়ামতের দিন সূরা মুলক ওই ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে।এছাড়াও সূরা মূলক প্রতি দিন রাতে পাঠ করলে সূরা মূলক কবরের আজাব থেকে হেফাজত করবে।সূরা মূলক এর মাধ্যমে আল্লাহর তা’আলার ক্ষমতা, কর্তৃত্ব বা মহত্বের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। 




ঘুমানোর আগে সূরা মুলক পড়লে কি হয়



রাতে ঘুমানোর আগে সূরা মুলক পড়লে কিয়ামতের দিন সুরা মুলক সুপারিশ করবে এবং কবরের আজাব থেকে হেফাজত করবে। তাই আমাদের প্রতি দিন রাতে ঘুমানোর আগে সূরা মুলক পড়তে হবে।প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে সূরা মুলক করলে কিয়ামতের দিন নেকির পাল্লা ভারী হবে।



সর্বোপরি দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী জীবন এবং পরকাল স্থায়ী জীবন। তাই পরকালে জান্নাত লাভের জন্য এবং কবরের আজাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন রাতে সূরা মুলক তেলাওয়াত করা উচিত। এটি আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি সুন্নত। কারণ তিনি কখনো সূরা মুলক না পড়ে রাতে ঘুমাতেন না।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post