গ্যাসের ট্যাবলেট এর নাম

গ্যাসের ট্যাবলেট এর নাম  


বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মানুষেরই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে। এ সময় কোন গ্যাসের ট্যাবলেট গ্যাস কমানোর জন্য সাহায্য করবে তার নাম অনেকেরই অজানা। তাই আমাদের আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচ্য বিষয় গ্যাস্ট্রিক কেন হয়, পেটে গ্যাস এর লক্ষণ, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়, অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি হয়, পেটে গ্যাস কমানোর উপায়, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস হলে করণীয় , পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে, গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না,পেটে গ্যাস হলে কি ওষুধ খাব,পেটে গ্যাস হলে কি শ্বাসকষ্ট হয়,গ্যাসের ট্যাবলেট এর নাম।


গ্যাসের ট্যাবলেট এর নাম


আমরা আজ এই পোস্টে আলোচনা করব গ্যাসের ট্যাবলেট এর নাম 


গ্যাস্ট্রিক কি


গ্যাস্ট্রিক হল ল্যাটিন শব্দ। যার অর্থ হলো প্রদাহ। পাকস্থলী বা অন্ত্রের প্রধান জনিত কারণেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। 


গ্যাস্ট্রিক কেন হয়


বিভিন্ন কারণে পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।


১.নির্দিষ্ট সময়মতো খাবার না খাওয়া।


২.অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া।


৩.অতিরিক্ত তেল বা মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া।


৪.অতিরিক্ত ফাস্টফুড বা কোল্ড ড্রিংকস জাতীয় খাবার খাওয়া।


৫.অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা টেনশন এ থাকা।


৬.ঘুমের ঘাটতি থাকা।


পেটে গ্যাস এর লক্ষণ


পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। আমরা যেন লক্ষণগুলো দেখে বুঝতে পারি যে আমাদের শরীরে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার জন্য নিচে লক্ষণগুলো দেওয়া হলঃ


পেটে গ্যাস এর লক্ষণ


১.পেটে, পিঠে বা কোমরে ব্যথা হওয়া।


২.পেটে বা বুকে জ্বালাপোড়া করা।


৩.কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেওয়া।


৪.পেট ফুলে যাওয়া।


৫.বারবার ঢেকুর তোলা।


৬.মুখে বা গলায় টকভাব লাগা।


৭.বারবার বায়ু ত্যাগ হওয়া।


৮.ক্ষুধা মন্দা দেখা দেওয়া।


৯.ঘন ঘন বমি হওয়া।


১০.খাবার হজম হতে সমস্যা হওয়া।


১১.মাথাব্যথা হওয়া।


পেটে গ্যাস্টিকের সমস্যা বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয়।


গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়


গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে শরীরের কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যথা অনুভূত হয়। যেমন - তলপেটে, উপরের পেটে বা  বুকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় এই গ্যাসের সমস্যার জন্য কোমরে ব্যথা হয়ে থাকে।


অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি হয়


অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে গ্যাস্টিক আলসারের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও শরীরে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে শরীরের ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে যার ফলে ইলেকট্রোলাইটের ভারসামহীনতা দেখা দেয়।


পেটে গ্যাস কমানোর উপায়


১.পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।


২.পুরো পেট মেসেজ করলে গ্যাসের সমস্যা কমতে পারে।


৩.ডাবের পানি পান করলে গ্যাসের সমস্যা কমতে পারে।


৪.টক দই খাওয়া যেতে পারে। এতে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।


৫.কলা খাওয়া যেতে পারে। এতে করে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।


৬.আদা খাওয়া যেতে পারে। আদা গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।


৭.জিরা পানি খাওয়া যেতে পারে।এতে করে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।


৮.ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া যেতে পারে।এতে করে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।


৯.খাবার পর হাটাহাটি বা হালকা ব্যায়াম করলে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।


১০.গরম পানিতে গোসল করা যেতে পারে। এতে শরীরে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।


পেটে অতিরিক্ত গ্যাস হলে করণীয় 


১.পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।


২.ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে।


৩.কম তেল মশলা যুক্ত খাবার খেতে হবে।


৪.নিয়ম অনুযায়ী সঠিক সময়ে খাবার খেতে হবে।


৫.খাওয়ার পরে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাটাহাটি বা ব্যায়াম করতে হবে।


৬.অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


৭.অতিরিক্ত মদ্যপান বা অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


৮.অতিরিক্ত বাইরের দোকানের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


৯.ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।


১০.অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা টেনশন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।


১১.প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘন্টা ঘুমাতে হবে।


পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে


অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন থাকে যে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে কি বুক ধরফর করে। হ্যাঁ, অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে বুক ধরফর করতে পারে। অনেক সময় বুকে হার্টবিট ও বেড়ে যেতে পারে।


গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না


১ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে ছোলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ ছোলা কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

২.গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে পপকন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩.গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪.গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫.গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে আপেল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৬.গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার বা অতিরিক্ত মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৭.গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিলে গ্রীষ্মকালীন বা শীতকালীন কিছু সবজি যেমন- এঁচোড়, মূলা বা কচু জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


পেটে গ্যাস হলে কি ওষুধ খাব


যদি পেটে গ্যাসের সমস্যা প্রথম দেখা দেয়। তাহলে এন্টাসিড বা কম পাওয়ার এর যেকোনো গ্যাসের ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে যদি অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। 


পেটে গ্যাস হলে কি শ্বাসকষ্ট হয়


হ্যাঁ, গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে অনেক সময় শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ অতিরিক্ত পেটে গ্যাস জমে গেলে অনেক সময় তা শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে। যার কারণে পরবর্তীতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গ্যাসের ট্যাবলেট এর নাম 


বাজারে গ্যাসের সমস্যা কমানোর জন্য বিভিন্ন গ্রুপের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। নিচে কয়েকটি গ্রুপের ট্যাবলেটের নাম দেওয়া হলোঃ

১.ওমিপ্রাজল 

২.রেনিটিডিন

৩.ইসোমিপ্রাজল

৪.র‍্যাবিপ্রাজল

উপরোক্ত গ্রুপের যেকোনো ওষুধ গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। যেকোন ওষুধের দোকানে উপরোক্ত গ্রুপের যেকোনো ওষুধ পাওয়া যায়।



সর্বোপরি গ্যাসের সমস্যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে ত্বরান্বিত করে। এ সমস্যা অতিরিক্ত দেখা দিলে গ্যাস্ট্রিক আলচারের সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে অনেক সময় ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের গ্যাসের সমস্যা যাতে তৈরি না হয়। তার জন্য নিয়ম অনুযায়ী জীবন যাপন করতে হবে।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post