পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাত কত রাকাত
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ তায়ালা ফরজ করে দিয়েছেন। মৃত্যুর পরে আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। এই নামাজের ভিতরে আল্লাহ তায়ালা ১৭ রাকাত নামাজ ফরজ করেছেন।কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ফরজ নামাজের সাথে কিছু সুন্নত নামাজ আদায় করতেন।কিন্তু আমরাঅনেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে সুন্নত কত রাকাত এবং কখন পড়তে হয় সে সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদের আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাত কত রাকাত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের চার্ট এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার ফজিলত সম্পর্কে।
আমরা আজ পোস্টে আলোচনা করব পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাত কত রাকাত
সুন্নাত নামাজ কি
আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিদিন কিছু সুন্নত নামাজ আদায় করতেন এই নামাজ ফরজ বা ওয়াজিব নামাজের মত অপরিহার্য নয়। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া আমাদের নবী এ নামাজ ছাড়তেন না। এমন নামাজ কে সুন্নাত নামাজ বা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বলা হয়।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নাত কত রাকাত
প্রতিদিন ফরজ নামাজের আগে পরে এমন সুন্নত নামাজ ১২ রাকাত। সেগুলো হলোঃ
ফজরের ফরজ নামাজের আগে ২ রাকাত।
যোহরের ফরজ নামাজের আগে ৪ রাকাত এবং পরে ২ রাকাত।
মাগরিবের ফরজ নামাজের পরে ২ রাকাত।
এশার ফরজ নামাজের আগে ৪ এবং পরে ২রাকাত।
এছাড়াও এর বাইরে,
জুম্মার নামাজের পরে ২ রাকাত।
রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করাও সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
এ সম্পর্কে তিরমিজি হাদিসে এসেছে, উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করে বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিনে রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়ে তার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি বানানো হয়। জোহরের আগে চার রাকাত। পরে দুই রাকাত। মাগরিবের পরে দুই রাকাত। এশার পরে দুই রাকাত। ফজরের আগে দুই রাকাত’। (তিরমিজি হাদিস নং- ৬৩৬২)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের চার্ট
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করার জন্য আমাদের অবশ্যই আগে জানতে হবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ফরজ নামাজ কত রাকাত, সুন্নত নামাজ কত রাকাত, নফল নামাজ কত রাকাত এবং বেতের বিতর নামাজ কত রাকাত।তাহলেসঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে পারব। তাই নিচে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের চার্ট দেওয়া হল।
নামাজের নাম | সুন্নাত | ফরজ | সুন্নাত | নফল | বিতর/ওয়াজিব | |
---|---|---|---|---|---|---|
ফজর | ০২ | ০২ | - | - | - | |
যোহর | ০৪ | ০৪ | ০২ | ০২ | - | |
আসর | ০৪ | ০৪ | - | - | - | |
মাগরিব | - | ০৩ | ০২ | ০২ | - | |
এশা | ০৪ | ০৪ | ০২ | ০২ | ০৩ | |
জুম্মা | - | ০২ | ৪/২ | ০২ | - |
সুন্নত নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে
না সুন্নাত নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে না। তবে সুন্নাত নামাজ ইচ্ছাকৃত ভাবে আদায় না করলে সেটা মাহরুম হয়ে যাবে। এছাড়াও সুন্নাত নামাজ হল আমাদের রাসুল (সাঃ) এর একটি সুন্নাত। তাই আমাদের সুন্ন্ত নামাজ আদায় করা উচিত।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার ফজিলত
নামাজ পড়ার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। নামাজ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বহু আয়াত নাযিল হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার উম্মতকে নামাজ আদায় করার কথা বলে গেছেন। সঠিকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে তার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে।
এ সম্পর্কে সহীহ বুখারী ও মুসলিম হাদিসে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একবার জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় কোন আমলটি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, ”নামাজ”।
নামাজ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ”যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ঠিকমতো আদায় করবে আল্লাহ তাকে পাঁচটি পুরস্কারে সম্মানিত করবেন।”
১.আল্লাহ তার অভাব দূর করবেন।
২.আল্লাহ তার ডান হাতে আমলনামা তুলে দেবেন।
৩.আল্লাহ তার কবরের আজাব মাফ করে দিবেন।
৪.বিজলীর ন্যায় পুলসিরাত পার করিয়ে দিবেন ।
৫.বিনা হিসাবে জান্নাত লাভ করবেন।
তাই আমাদের সঠিক নিয়ম জেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা উচিত।
সর্বোপরি হাদিসে আছে, ”নামাজ বেহেস্তের চাবি”। তাই আমাদের নামাজ পড়ার মাধ্যমে বেহেস্তে যাওয়ার পথ সহজ করতে হবে।এছাড়াও নামাজের মাধ্যমে দুনিয়ার সকল পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা যায় এবং আল্লাহর পথে চলা যায়। তাই আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে হবে।