রুকু থেকে উঠার পর দোয়ার ফজিলত

 রুকু থেকে উঠার পর দোয়ার ফজিলত


নামাজ বেহেস্তের চাবি। আল্লাহ সকল মুসলিম উম্মার ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। ফরজ আদায় না করলে গুনাহ হয়। নামাজ আদায় করার কিছু নিয়ম আছে। এই নিয়ম মেনে নামাজ না পরলে নামাজ সঠিকভাবে আদায় হয় না।আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন রুকুতে যে দোয়া পড়তে হয়, রুকু থেকে ওঠার দোয়া, রুকু থেকে ওঠার পরে দোয়া, সিজদায় যে দোয়া পড়তে হয় এবং রুকু থেকে উঠার পর দোয়ার ফজিলত সম্পর্কে। 

 





আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব রুকু থেকে উঠার পর দোয়ার ফজিলত



রুকুতে যে দোয়া পড়তে হয়


নামাজ সহিহ ও শুদ্ধভাবে আদায় করতে হলে সঠিকভাবে রুকুতে যেতে হবে এবং রুকুর দোয়া পাঠ করতে হবে। 


সহীহ তিরমিজি ও আবু দাউদ হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন। রুকুতে যেয়ে  তিনবার, পাঁচবার, সাতবার বা ততোদিক নিন্মুক্ত দোয়াটি পাঠ করতে হবে। 

দোয়াটি হলো:


سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ.

বাংলা উচ্চারণ : “সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম।”

অর্থ : ”আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।”


উপরোক্ত দোয়াটি রুকুতে যেয়ে  তিনবার, পাঁচবার, সাতবার বা ততোদিক দোয়াটি পাঠ করতে হবে।


এছাড়াও সহীহ বুখারী ও মুসলিম হাদিসে এসেছে, হযরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকুতে যেয়ে নিন্মুক্ত দোয়াটি ও পাঠ করতেন।

দোয়াটি হলো:

سبحانك اللهمّ ربنا وبحمدك اللهمّ اغفر لي

বাংলা উচ্চারণ : “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা; আল্লাহুম্মাগফরলি।”

অর্থ : ”হে আল্লাহ্‌! হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করে দিন।”


রুকু থেকে ওঠার দোয়া


রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। নিচে দোয়াটি দেওয়া হল:

দোয়াটি হলো:

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

বাংলা উচ্চারণ : ”সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্।”

অর্থ : ”যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন ।”



রুকু থেকে ওঠার পরে দোয়া


হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু থেকে ওঠার পর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দোয়াটি পাঠ করতেন।

দোয়াটি হলো:

رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ، حَمْداً كَثيراً طَيِّباً مُبارَكاً فِيهِ

বাংলা উচ্চারণ: ”রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু, হামদান কাছীরান ত্বায়্যিবান মুবা-রাকান ফীহি।”

অর্থ: ”হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা, অঢেল, পবিত্র ও বরকত-রয়েছে-এমন প্রশংসা।”


সহীহ মুসলিম হাদিসে এসেছে,  আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা (রা:) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিন্মুক্ত দোয়াটি ও পাঠ করতেন। 

দোয়াটি হলো:

اللهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ مِلْءُ السَّمَاءِ ، وَمِلْءُ الْأَرْضِ ، وَمِلْءُ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ ، اللهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ ، اللهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ وَالْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْوَسَخِ

বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু মিলউস সামা-ই, ওয়া মিলউল আরদ্বি, ওয়া মিলউ মা শিই্তা মিন শায়ইন বা’দু। আল্লাহুম্মা তাহহিরনি বিছ্ছালজি ওয়াল বারাদি, ওয়াল মা-ইল বারিদি; আল্লাহুম্মা তাহহিরনি মিনাজ জুনু-বি ওয়াল খাতায়া, কামা য়ুনাক্কিছ ছাওবুল আবয়াদ্বু মিনাল ওয়াসাখ।"

অর্থ : "হে আল্লাহ্‌! আপনার প্রশংসা আসমান পূর্ণ করে, জমিন পূর্ণ করে, আর এর পরে যা পূর্ণ করা আপনার ইচ্ছা তা পূর্ণ করে।হে আল্লাহ্‌! আমাকে পবিত্র করুন বরফ দিয়ে, শিলা দিয়ে এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে। হে আল্লাহ্‌! আমাকে গুনাহ ও ভুল-ভ্রান্তি থেকে পবিত্র করুন যেভাবে সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে নির্মল করা হয়।"


সিজদায় যে দোয়া পড়তে হয় 



সহিহ তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ,নাসাঈ ও আহাম্মদ হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় গিয়ে নিন্মুক্ত দোয়াটি তিনবার পাঁচবার সাতবার বা ততদিক পাঠ করতেন । 

দোয়াটি হলো:


سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

বাংলা উচ্চারণ : ”সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।”

অর্থ : ”আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

এছাড়াও সহীহ বুখারী ও মুসলিম হাদিসে এসেছে, হযরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় যেয়ে নিন্মুক্ত দোয়াটি ও পাঠ করতেন।

দোয়াটি হলো:

سبحانك اللهمّ ربنا وبحمدك اللهمّ اغفر لي

বাংলা উচ্চারণ : “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা; আল্লাহুম্মাগফরলি।”

অর্থ : ”হে আল্লাহ্‌! হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করে দিন।”


এছাড়াও সহিহ মুসলিম ও আবু দাউদ হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় যেয়ে নিন্মুক্ত দোয়াটি ও পাঠ করতেন।

দোয়াটি হলো:

سُبوحٌ، قُدُّوسٌ، رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِ

বাংলা উচ্চারণ : ”সুব্বূহুন কুদ্দূসুন রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়াররূহ।”

অর্থ: ”(তিনি/আপনি) সম্পূর্ণরূপে দোষ-ত্রুটিমুক্ত, অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত; ফেরেশতাগণ ও রুহের প্রতিপালক।”


রুকু থেকে উঠার পর দোয়ার ফজিলত 



রুকু থেকে উঠার পর দোয়া করার ফজিলত অনেক। কারণ দোয়া করার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র রাখেন, আল্লাহ আমাদের উপর বরকত নাযিল করেন।




সর্বোপরি সঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে হলে রুকু সেজদা দোয়ার সঠিকভাবে পড়তে হবে এবং রুকু ও সিজদা সঠিকভাবে আদায় করতে হবে।তাই আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনারা যদি পড়ে থাকেন তাহলে রুকু সেজদার দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post