ইসলামে স্বামী-স্ত্রী সহবাসের নিয়ম ও দোয়া

ইসলামে স্বামী-স্ত্রী সহবাসের নিয়ম ও দোয়া


ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের নিয়ম ও দোয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি পুরুষ ও নারীকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী সহবাসের কিছু নিয়ম ও দোয়া পবিত্র কুরআন ও হাদিসে আছে যা আমরা অনেকেই জানিনা।তাই আমরা আজ এই পোষ্টের মাধ্যমে ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের নিয়ম ও দোয়া, স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের দোয়ার ফজিলত, বিয়ের রাতের আমল, বাসার রাতের দোয়া সমূহ সম্পর্কে জানব।






আমরা আজ এই পোস্টে আলোচনা করব ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের নিয়ম ও দোয়া



বিয়ে নিয়ে হাদিস


দাম্পত্য জীবন মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর শুরু হলো বিয়ে দিয়ে। বিয়ে হল ইবাদতের কাজ। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,তোমরা বিবাহযোগ্যদের বিবাহ সম্পন্ন করো তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুকূলে তাদের সচলতা দান করবেন, আল্লাহ তো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞানী। (সূরা নূর আয়াত নং- ৩২)


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম যেসব মুসলিমদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো তাদেরকে বিয়ে করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমাদের শেষ নবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ের সামর্থ্য রাখে তাদের বিয়ে করা কর্তব্য। কেননা বিয়ে দৃষ্টির নিয়ন্ত্রণকারী, যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী। আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন রোজা রাখে কেননা রোজা তার ঢালস্বরূপ। (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)


স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ইসলামের কিছু নিয়ম ও দোয়া রয়েছে নিম্নে তা আলোচনা করা হলোঃ


স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের দোয়া


ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের একটি নির্দিষ্ট দোয়া হাদিসে আছেন যা করার মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী শয়তানের থেকে রক্ষা পায়।এছাড়াও কিছু দোয়া রয়েছে যা বিবাহ হওয়ার পর পড়তে হয় যা আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা দিয়েছেন। আর এই দোয়া পাঠ করার মাধ্যমে জীবন সুখময় হয়ে ওঠে। আল্লাহ শয়তানের কুদৃষ্টি থেকে আমাদের হেফাজত করেন। ইসলামে স্বামী স্ত্রী সহবাস করার সময় এ দোয়া পড়তে হবে। এতে শয়তান তাদের দিকে নজর দিতে পারে না। স্বামী স্ত্রী সহবাসের দোয়া নিম্নে আলোচনা করা হলো- 

দোয়াটি হলঃ


بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا


বাংলা উচ্চারণঃ ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’


অর্থ: ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমাদেরকে তুমি শয়তান থেকে দূরে রাখ। আমাদেরকে তুমি যা দান করবে (মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে) তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখ।’


এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, এই দোয়া পাঠ করার পরে যদি তাদের কোন সন্তান দেওয়া হয়। তাহলে সেই সন্তানকে শয়তান আর কখনও  ক্ষতি করতে পারবে না। 


স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের দোয়ার ফজিলত


হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আপনার আব্বাস রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যখন তোমাদের স্ত্রীর সাথে যৌন মিলন বা সহবাস করার ইচ্ছা হয় তখন সহবাসের দোয়াটি পড়ে সহবাসে লিপ্ত হয় এই মিলনের ফলে যদি কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারি, মসলিম, মিশকাত)



হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন যে ব্যক্তি সহবাসের ইচ্ছা করে এবং তার নিয়্যাত যদি এই হয় যে আমি ব্যভিচার থেকে নিজেকে দূরে এবং আমার মন ঠিক রাখবো আর জন্ম নেমে নেককার ও সৎ সন্তান । এই নিয়্যাতে স্ত্রীর সাথে মিলন করলে সওয়াব হওয়ার সাথে সাথে নেক উদ্দেশ্যও পূরণ হবে।


বিয়ের রাতের আমল


নবী-রাসূলগণ সবাই বিবাহ করেছেন। নারী ও পুরুষ তাদের যৌন চাহিদা পূরনের জন্য সহবাস করেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বিয়েকে দ্বীনের অর্ধেক বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিয়ে জীবনে অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেন যে বিয়ে করল সে তার অর্ধেক দিন অর্থাৎ ঈমান পূর্ণ করল। সে যেন বাকি অর্ধেকের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করে।(তাবরানী)। 



বিয়ের রাতে কিছু আমল এর কথা বলেছেন হক্কানী ওলামায়ে কেরামগণ।বিয়ের রাতে স্বামী স্ত্রী একত্রে দুই রাকাত নামাজ আদায় করাকে আলেমগণরা মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য করেছেন।


ইবনে আবি শাইবা শাকিক থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর কাছে এক লোক এসে বলল আমি এক যুবতী মেয়েকে বিয়ে করেছি আমি আশঙ্কা করছি সে আমাকে অপছন্দ করবে। বর্ণনাকারী বলেন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ বললেন, মিল মহব্বত আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে।দূরত্ব ও ঘৃণা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। আল্লাহ যা হালাল করেছেন শয়তান সেটাকে তোমাদের কাছে অপছন্দনীয় করে তুলতে চায়। যখন সে তোমাদের কাছে আসবে তখন তাকে তোমার পেছনে দুই রাকাত নামাজ পড়া নির্দেশ দেবে। (মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা ১৭১৫৬)



বাসর রাতের দোয়াসমূহ


বাসর রাতে স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করা সুন্নত। হযরত সাহেব থেকে তিনি তার পিতা থেকে তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন তোমাদের কেউ যখন কোন নারীকে বিয়ে করে তখন সে যেন স্ত্রীর মাথায় অগ্রভাগ ধরে বাসর রাতে দোয়া পড়ে। নিম্নে দোয়াটি দেওয়া হলো-



اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ


বাংলা উচ্চারণঃ ”আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরিহা ওয়া খাইরিমা জাবালতাহা আলাইহি, ওয়া আউজুবিকা মিন সাররিহা ওয়া সাররিমা জাবালতাহা আলাইহি।”


অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তার কল্যাণটুকু ও যে কল্যাণের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছেন, অভ্যস্ত করেছেন সেটা প্রার্থনা করি। আর তার অনিষ্ট থেকে ও যে অনিষ্টের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছেন, অভ্যস্ত করেছেন তা থেকে আশ্রয় চাই)। (সুনানে আবু দাউদ ২১৬০)



অর্থ্যাৎ আমি যাকে বিয়ে করব তার কল্যাণ চাচ্ছি ও তার  অনিষ্ট থেকে আল্লহর কাছ থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।


ইসলামে যে বিয়ে বরকতময়


আমাদের নবী (সাঃ) এর নিয়মে বিবাহ সম্পন্ন করা হলে সে বিয়ের বরকতময় হয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই সে বিয়ে বেশি বরকত পূর্ণ হয় যে বিয়েতে খরচ কম হয়। (মুসনাদে আহমাদ ও মুস্তাদরাকে হাকিম)। এছাড়াও আরও বিয়ের সংশ্লিষ্ট সুন্নত রয়েছে। বিবাহ সাদাসিধা ও অনারম্বর হওয়া অবচয়,অপব্যয়, বিজাতীয় অপসংস্কৃতিমুক্ত হওয়া, যৌতুকের দাবি না থাকা সামর্থ্যের বেশি দেনমোহর ধার্য না করা। (তাবারানি আওসাত- ৩৬১২, আবু দাউদ- ২১০৬)


শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে যে বিষয়গুলো জানা উচিত


শয়তান পছন্দ করে যৌনতাকে পাশাপাশি উলঙ্গ অবস্থায় থাকাকে। স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় শয়তান হাজির হওয়ার নিজেকে ই যৌনতায় জড়ানোর জন্য। তাছাড়া শয়তান চায় যৌন কাজগুলো ইসলামিক নিয়ম না মেনে করি। 


আমরা যখন শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর শিখানো দোয়া পড়ে সহবাস শুরু করবো তখন শয়তান সেখান থেকে চলে যায়। যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর সহবাস হয় শয়তানের প্রভাব মুক্ত ও নিরাপদ। এই মিলনের ফলে যদি সন্তান জম্ন নেয় তাহলে তার পরিবর্তী জীবনের সব ক্ষেত্রে শয়তানের দাগা থেকে নিরাপদ থাকে।


আর রাসুলের শেখানো দোয়া না পড়ে সহবাস করলে শয়তান সেই মিলনে যোগদান করে এবং অন্তরে কুমন্ত্রণা দান করে। অনেক সময় দেখা যায় রাসুলের শিখিয়ে দেয়ার নিয়ম অনুসরণ না করে অন্য কাজ করে ফলে তাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এই মিলনের ফলে যে সন্তানের জন্ম হয় সে সন্তান শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি পায় না শয়তান তাকে খারাপ দিকে কুমন্ত্রণা দান করে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত বিশেষ করে মুসলমানদের সহবাসের দোয়া পড়ে সহবাস করা।



সহবাসের এই দোয়াটি পড়া বা শেক্ষা কোন লজ্জার বিষয় না। বিবাহিত জীবনের শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি এবং নেককার সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য সহবাসের পূর্বে এই দোয়া পড়া অতীব জরুরী । 



আমরা অনেকেই বলি যে আমাদের সন্তানকে কোরআনের হাফেজ বানাবো কিন্তু তাকে কোরআনের হাফেজ বানানো সম্ভব হচ্ছে না সে কোন কথাই শোনে না সে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ইসলামের কথা না শুনে ইসলামের বাইরে চলে যাচ্ছে। শয়তানের ছলনায় পড়ছে। তাই আমাদের আশেপাশে সবাইকে এই দোয়া শেখানো উচিত এবং এই দোয়ার ফজিলত সবাইকে জানানো উচিত। 


ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের নিয়ম 


  • স্বামী স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে অবশ্যই পবিত্র থাকতে হবে।
  • বিসমিল্লাহ বলে সহবাস শুরু করা মুস্তাহাব। তবে যদি মনে না থাকে তাহলে বীর্যপাতের আগে মনে পরলেও সাথে সাথে পড়ে নিতে হবে।
  • সহবাসের সময় যেমন পবিত্র থাকা জরুরী তেমনি সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিত।
  •  আল্লাহর রাসূল সুগন্ধি ব্যবহার করতে পছন্দ করতেন এবং এটা তার সুন্নত। 
  • দুর্গন্ধ আসে এমন কিছু ব্যবহার করা যাবে না। দুর্গন্ধ জাতীয় সকল কিছু পরিহার করতে হবে কারণ দুর্গন্ধ আসলে মিলনের ইচ্ছা কমে যায়।
  • কেবলামুখী হয়ে সহবাস করা যাবে না।
  • সহবাসের সময় একদম উলঙ্গ হওয়া যাবে না দরকার হলে স্বামী পিঠে পাতলা কাপড় দিয়ে দিতে হবে। 
  • নিজে তৃপ্তি পাওয়ার পাশাপাশি স্ত্রীকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দেওয়া। স্ত্রীকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি না করার পূর্বে বিচ্ছিন্ন না হওয়া।
  • বীর্যপাতের সময় মনে মনে সহবাসে দোয়া পড়া।
  • স্ত্রীর মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় সহবাস না করা।
  • বিদেশে বা সফরে যাওয়ার আগের রাত্রে সহবাস না করা।
  • সহবাসের সময় স্ত্রী সহিত কথা কম বলা।
  • জোহরের নামাজের পরে সহবাস না করা।
  • চন্দ্র মাসের প্রথম ও ১৫ তম রাতে মিলিত না হওয়া। 
  • স্ত্রীর যৌনাঙ্গের দিকে তাকিলে সহবাস না করা।
  • ভরা পেটে বা খাবার খেয়েই সহবাস না করা।
  • উল্টোভাবে স্ত্রীর সাথে সহবাস না করা।
  • স্বপ্নদোষের পর গোসল না করে সহবাস না করা।
  • স্ত্রীর যৌনাঙ্গ ছাড়া অন্য কোথায় সহবাস না করা।

অধিক সময় সহবাসের দোয়া


অধিক সময় সহবাস করা যাবে এমন কোন দোয়া নেই। স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের দোয়া পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।  তবে অধিক সময় সহবাসের কিছু পদ্ধতি ও নিয়ম আছে যা আমাদের এই পোস্টে উপরোক্ত আলোচনা করা হয়েছে। এই নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করলে অধিক সময় সহবাস করা সম্ভব।  এছাড়াও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোন একজনের ভেতরে কোন সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। 


স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের পর গোসল নিয়ে কুসংস্কার


  • সহবাসের পর সাথে সাথে গোসল না করলে গুনাহ হয়।
  • সহবাসের পর কিছুতে হাত দেয়া যাবে না, কিছু ধরা যাবে না।
  • সহবাসের পরে রান্না করা যাবে না এতে ঘরের অমঙ্গল হয়।
  • গোসলের পূর্বে খাওয়া-দাওয়া করা যাবে না।
  • শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে না।
  • সহবাসের পর কোন দোয়া বা জিকির করা যাবে না।
  • সহবাসের পর কোন শরীরে স্পর্শ করা যাবে না।


এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার সমাজে প্রচলিত আছে যা কোরআনে ও হাদিসে কোথাও নেই সুতরাং আমরা আমাদের নবী যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন সেই ভাবে সহবাস করবো যাতে শয়তানের কুনজর থেকে বাঁচা যায়।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post