বাথরুমে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দোয়া
প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দেওয়ার জন্য আমাদের বাথরুমে যেতে হয়।অনেক সময় বাথরুমে অনেক ধরনের খারাপ জিন থাকে, তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাথরুমে প্রবেশ বা বের হওয়ার জন্য কিছু দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন।কিন্তু আমরা অনেকেই বাথরুমে প্রবেশ ও বাথরুম থেকে বের হওয়ার দোয়া কি সে সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন বাথরুমে প্রবেশের দোয়া, বাথরুম থেকে বের হওয়ার দোয়া এবং বাথরুমে যাওয়ার নিয়ম।
আমরা আর এই আর্টিকেলে আলোচনা করব বাথরুমে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দোয়া
বাথরুমে প্রবেশের দোয়া
বাথরুমে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দোয়া পড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর একটি সুন্নাত।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাথরুমে থাকা খারাপ জিন থেকে বাঁচার জন্য বাথরুমে প্রবেশের আগে দোয়া পাঠ করতে বলেন।
এ সম্পর্কে সহীহ বুখারি হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাথরুমে প্রবেশের আগে নিম্নক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন।
দোয়াটি হলঃ
اَللهُمَّ إِنّيْ أَعًوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَ الْخَبَائِثِ
বাংলা উচ্চারণঃ ”আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবায়িছ।”
অর্থঃ ”হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে পুরুষ ও নারী শয়তানের অনিষ্ট তথা ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।”
এছাড়াও তিরমিজি হাদীসে এসেছে, হযরত আলী ইবনু আবু তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, টয়লেটে ঢোকার সময় জিনের চোখ ও আদম সন্তানের গোপনীয় অঙ্গসমূহের মধ্যে অন্তরাল সৃষ্টি করতে চাইলে নিম্নক্ত দোয়াটি পড়তে হবে।
দোয়াটি হলোঃ
بِسْمِ اللهِ
বাংলা উচ্চারণঃ ”বিসমিল্লাহি”।
অর্থঃ ”আল্লাহর নামে।”
বাথরুমে প্রবেশের আগে দোয়া পড়ার ফজিলত
বাথরুমে প্রবেশের আগে দোয়া পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ বাথরুমে থাকা বদ ও খারাপ জিনের নজর থেকে বাঁচার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম দোয়াটি পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাথরুম থেকে বের হওয়ার দোয়া
বাথরুমে প্রবেশের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। সেভাবে বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে সহি বুখারি হাদিসে এসেছে, হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় নিম্নক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন।
দোয়াটি হলোঃ
ﻏُﻔْﺮَﺍﻧَﻚَ
বাংলা উচ্চারণঃ ”গোফরানাকা।”
অর্থঃ ”(হে আল্লাহ!) আপনার কাছে ক্ষমা চাই।”
এছাড়া ইবনে মাজাহ হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় নিন্মুক্ত দোয়াটি ও পাঠ করতেন।
দোয়াটি হলঃ
غُفْرَانَكَ الْحَمْدُ لِلهِ الَّذِيْ اَذْهَبَ عَنِّيْ الْاَذَى وَعَافَانِيْ
বাংলা উচ্চারণঃ ”গোফরানাকা আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়া আফানি।’
অর্থঃ ”(হে আল্লাহ!) আপনার কাছে ক্ষমা চাই। সব প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য; যিনি ক্ষতি ও কষ্টকর জিনিস থেকে আমাকে মুক্তি দিয়েছেন।”
বাথরুমে যাওয়ার নিয়ম
বাথরুমে যাওয়ার পরে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত। নিচে নিয়ম কানুন গুলো দেওয়া হলোঃ
১,বাথরুমে প্রবেশের আগে দোয়া পড়া।
২.বাথরুমে প্রবেশের সময় আগে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা।
৩.বাথরুমে প্রবেশের পর কোন প্রকার দোয়া বা তাসবিহ পাঠ না করা।
৪.শরীরের সতর ঠিক রেখে পুরোপুরি কাপড় উঠিয়ে না বসা।
৫.বাথরুমে প্রসাব বা পায়খানার পর পানি ব্যবহারে পূর্বে ঢিলা কুলুপ ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে গোবর বা হাড় জাতীয় পদার্থ দ্বারা রাসূল (সাঃ) নিষিদ্ধ করেছেন।
৬.ঢিলা কুলুপ ব্যবহার করার পর পুনরায় পানি ব্যবহার করা।
৭.কেবলাকে সামনে বা পিছনে রেখে বাথরুমে বসা নিষিদ্ধ।
৮.বাথরুমে খালি পায়ে প্রবেশ না করা।
৯.বাথরুমে প্রবেশের সময় মাথা ঢেকে রাখা।
১০.বাথরুমে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব পায়খানা না করা।
১১.ডান হাত দিয়ে ঢিলা কুলুপ বা পানি ব্যবহার না করা।
১২.বাথরুমে প্রসাবা পায়খানা করার বেশিক্ষণ আগে কাপড় না উঠানো।
বাথরুমে প্রবেশ করার পর উপরোক্ত নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত।
সর্বোপরি বাথরুমে প্রবেশ বা বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় আমাদের দোয়া পড়া উচিত। কারণ এই দোয়া পড়ার মাধ্যমে আমরা খারাপ জিন বা বদ নজর থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি।